স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, জননেতা এড. হুমায়ুন কবিরের সাথে আমার যােগাযােগ হয় ৬৯ গণ-অভ্যুত্থানের সময়। তিনি ছিলেন আমার রাজনৈতিক সতীর্থ। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিলগ্নে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে স্থানীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পটুভূমি তৈরি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা দলের বাইরে গিয়ে সংগ্রাম প্রতিরােধ গড়ে তােলার চেষ্টা করেছিলেন মরহুম এড. হুমায়ুন কবীরও তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তাঁর মধ্যে সেদিন আমরা দেখেছিলাম এক রুদ্ররূপ। তিনি জাপার রাজনীতির সময় সংসদে দাড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার চেয়েছিলেন যা আজকে এক উজ্জ্বল ইতিহাস। হুমায়ুন কবির ছিলেন প্রকৃত একজন দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনৈতিক ব্যক্তি। একই সাথে তিনি ছিলেন একজন ধর্মানুরাগী ব্যক্তিত্ব। শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়ন, সামাজিক শৃঙ্খলা সুরক্ষা এবং মানুষে মানুষে সম্প্রীতি গড়ে তুলতে এড. হুমায়ুন কবির ছিলেন আলােকিত মানুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতিতে আমার জন্য হুমায়ুন কবিরই প্রথম সুযােগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। সেজন্য আজকে তাঁকে আমি কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করছি। জীবনের শেষ দিনগুলােতে শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি অনেক কথা আমাদের বুঝাতে পারতেন না। এতদসত্ত্বেও তিনি প্রতিদিন মানুষের কাছে ছুটে গেছেন, মানুষের সমস্যা দুর্দশা দুর করতে চেষ্টা করেছেন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার উদ্যােগে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক দুই দুইবারের সফল পৌর চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সফল সাধারন সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক প্রয়াত আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবিরের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরো বলেন, হুমায়ুন কবির ছিলেন এক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। আমাদের স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবগুলােতে কােন না কােনভাবে এড. হুমায়ুন কবিরের অবদান রয়েছে। আমি উপ-নির্বাচনে এবং মিসেস নায়ার কবির পৌর মেয়র পদে মনােনয়ন পাবার পর তিনি যে কত খুশী হয়েছিলেন তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবাে না। তিনি বলেন, এককালে আমাদের পশ্চাতপদ উপজেলা বিজয়নগরে হুমায়ুন কবির যে কতরকম কাজ করেছেন তা দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। আমি বিজয়নগর এলাকায় যত কাজ করেছি এসবের অনেকগুলােতে হুমায়ুন কবির সাহেবের অনুরােধ ও পরামর্শ ছিল। গণমানুষের নেতা হয়ে গণমানুষের কল্যাণ কাজ করতে হবে তা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথম তিনিই দেখিয়েছিলেন। আমি জননেতা হুমায়ুন কবিরের রুহের মাগফেরাত করি ও শােকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।
মােকতাদির চৌধুরী এমপি তার বক্তব্যে নির্মাণাধীন কাের্টরােডস্থ সুপার মার্কেটটি হুমায়ুন কবিরের নামে নামকরণের প্রস্তাব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ রহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযােদ্ধা আল মামুন সরকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্মরণসভা উদযাপন কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব মোঃ ফেরদৌস মিয়া।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র বীর মুক্তিযােদ্ধা আলহাজ্ব মুরাদ খান, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এড. লােকমান হােসেন, সদর উপজেলা মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডার সাবেক কমান্ডার আলহাজ্ব আবু হােরায়রাহ্ প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের কােষাধ্যক্ষ ও দৈনিক দিনদর্পনের নির্বাহী সম্পাদক নজরুল ইসলাম শাহজাদা’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি তাজ মোঃ ইয়াছিন, হাজী মোঃ হেলাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, গােলাম মহিউদ্দিন খান খােকন, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসােসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলম, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হােসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযােদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কালাম ভূইয়া, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর হােসনে আরা বেগম, হালিমা আক্তার কাজল, সালমা বেগম, মাহমুদা রহমান, কাউন্সিলর মোঃ জামাল হােসেন, আবুল বাশার, খবির উদ্দিন, আলহাজ্ব মিজানুর রহমান আনছারী, কাউসার, ওমর ফারুক জীবন, শাহ মোঃ শরিফ, মুফতি মােকবুল হােসেন, আব্দুল হাই ডাবলু, রফিকুল ইসলাম নেহার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযােগিতায় ছিলেন পৌরসভার সচিব মোঃ সামছুদ্দিন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গােলাম কাউসার, সহকারী প্রকৌশলী কাউসার আহমেদ, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান, উপ সহকারী প্রকৌশলী সুমন দত্ত, পবিত্র ভূষণ পাল, আতাউর রহমান, মোঃ ইদ্রিস মিয়া অপু।
সভাশেষে দােয়া মাহফিল পরিচালনা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট আলেম হযরত মাওলানা মুফতি কেফায়েত উল্লাহ নূর।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply